শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার একটি বিপ্লব।শিক্ষা মানব জীবনের
একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন পদ্ধতিতে মানুষের মাঝে জ্ঞান বিতরণ
করা হয়েছে।
এ প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক,সহজলভ্য এবং কার্যকর করে তুলেছে।তবে এর
কিছু অসুবিধা রয়েছে যা সমাধান করা প্রয়োজন। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং
শিক্ষকদের এ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে সচেতন হতে
হবে।
পেজ সূচিপত্রঃশিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
- শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
- শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রভাব
- শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডিজিটাল প্রযুক্তির নাম
- শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা
- শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের অসুবিধা
- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার
- বাংলাদেশের উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা
- শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয়
- শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদান
- লেখকের মন্তব্যঃশিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষণীয়।মানুষের মাঝে সচেতনতা
বেড়েছে তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারও বেড়েছে।ডিজিটাল বাংলাদেশ
গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক উন্নতি দেখা যায়।
ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো
উন্নত করতে পারি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে
পারি।একই সাথে আমাদের এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ঝুঁকি গুলো সম্পর্কেও সচেতন
থাকতে হবে এবং তা মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বহুবিধ। নিচে কয়েকটি
উল্লেখযোগ্য ব্যবহার আলোচনা করা হলোঃ
- অনলাইন শিক্ষাঃইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই বিশ্বের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোর্স এবং লেকচার গুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারে।এটি সময় বাঁচায় ও ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা দূর করে থাকে যা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত সুবিধা জনক।
- ই-লার্নিং প্লাটফর্মঃবিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম রয়েছে।যা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কোর্সের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।ই-লার্নিং প্লাটফর্ম গুলোতে ভিডিও,লেকচার,কুইজ ও অন্যান্য শিক্ষনীয় উপকরণ পাওয়া যায়,যা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে থাকে যেমনঃকোর্সেরা এবং ইউডেমি।
- ডিজিটাল শ্রেণীকক্ষঃডিজিটাল শ্রেণীকক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর,ইন্টারঅ্যাকটিভ হোয়াইটবোর্ড ও অন্যান্য ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষকরা আরও আকর্ষণীয় এবং কার্যকর ভাবে পাঠদান করতে পারেন।
- শিক্ষনীয় অ্যাপস এবং সফটওয়্যারঃশিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন শিক্ষণীয় অ্যাপস এবং সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে।এই অ্যাপসগুলোর মাধ্যমে তারা গেম, সিমুলেশন এবং অন্যান্য ইন্টারেক্টিভ উপাদানের মাধ্যমে শিখতে পারে অনেক কিছু।
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটিঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কে সংক্ষেপে ভিআর বলে এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটিকে সংক্ষেপে এআর বলে।ভিআর এবং এআর প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। ভিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। আবার,এআর প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং এর মাধ্যমে বিজ্ঞানের জটিল ধারণাগুলো খুব সহজেই বুঝতে পারে।
- ডাটা বিশ্লেষণঃডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষমতা এবং প্রগ্রেস সম্পর্কে ডাটা গ্রহণ এবং বিশ্লেষণ করা যায়। এই ডাটার মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা গুলো চিহ্নিত করতে পারে এবং তাদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডিজিটাল প্রযুক্তির নাম
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির নানাবিধ ব্যবহার লক্ষনীয়। ডিজিটাল
প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে
পারি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি।
একই সাথে আমাদের
এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ঝুঁকি গুলো সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে এবং তা মোকাবেলা
করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ডিজিটাল প্রযুক্তির নাম গুলো হলঃ
- কম্পিউটার বা ল্যাপটপঃ কম্পিউটার বা ল্যাপটপ শিক্ষা ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত হয়।
- ইন্টারনেটঃ ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রায় অসম্ভব।
- স্মার্টফোন বা ট্যাবঃএকটি স্মার্ট ফোন বা ট্যাব ছাড়া ডিজিটাল প্রযুক্তির কথা কল্পনাই করা যায় না।
- মাল্টিমিডিয়াঃ বিভিন্ন ধরনের মাল্টিমিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রভাব
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের অনেক প্রভাব
রয়েছে।ডিজিটাল প্রযুক্তি হলো এমন এক প্রযুক্তি,যা ডাটা এবং তথ্যকে ডিজিটাল
ফরমেটে রূপান্তরিত করে সঞ্চয় এবং প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে।এর মধ্যে রয়েছে
কম্পিউটার ইন্টারনেট মোবাইল ফোন সফটওয়্যার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস
গুলো। শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রভাব এর মধ্যে সুবিধা
বেশি রয়েছে।
তবে এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে যা সমাধান করা প্রয়োজন। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
এবং শিক্ষকদের এ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে সচেতন হতে
হবে।শিক্ষা ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের
পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এসেছে।শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের যেন
ক্ষতিকারক প্রভাব না পড়ে সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা
ডিজিটাল প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে শিক্ষাক্ষেত্রেও এক নতুন দিগন্ত
উন্মোচিত হয়েছে। এই প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক সহজলভ্য এবং
কার্যকর করে তুলেছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে নিচে
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সুবিধা আলোচনা করা হলোঃ
- শিক্ষার মান উন্নয়নঃডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষকরা আরো আধুনিক এবং কার্যকর পদ্ধতিতে পাঠদান করতে পারেন,যা শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক।
- শিক্ষার সহজলভ্যতাঃঅনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে যে কোন সময় এবং যে কোন স্থানে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাওয়া যায়,যা শিক্ষার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি করে।
- শিক্ষার্থীর আগ্রহ বৃদ্ধিঃডিজিটাল সরঞ্জাম এবং ইন্টার একটিভ উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরো আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং তাদের শেখার প্রক্রিয়া আরো আনন্দদায়ক হয়।
- ব্যক্তিগত শিক্ষাঃডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যক্তিগত শিক্ষা প্রদানের সুযোগ তৈরি করে থাকেন।
- শিক্ষকের ভূমিকা পরিবর্তনঃডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষকের ভূমিকা একজন জ্ঞান বিতরণকারীর পরিবর্তে একজন সহায়ক হিসেবে পরিবর্তিত হয়।
- যোগাযোগের উন্নতিঃডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়। শিক্ষার্থীরা সহজেই তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারে এবং শিক্ষকরা তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।
- সময় এবং অর্থের সাশ্রয়ঃঅনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত এবং অন্যান্য খরচ কমে যায়। এছাড়াও শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা সহজ হয়। এভাবে সময় এবং অর্থের সাশ্রয় হয়।
- অ্যাক্সেসিবিলিটিঃডিজিটাল প্রযুক্তি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরি করে কেন্দ্র এবং অন্যান্য সহায়ক প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করতে পারে।
- বিশ্বব্যাপী শিক্ষার সুযোগঃডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হতে পারে এটি তাদের জ্ঞান এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে থাকে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির অসুবিধা
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য।কিন্তু এই
প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহারের বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। বিশ্বায়নের যুগে,এই
প্রযুক্তির ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন রকম সাইড ইফেক্ট দেখা
দেয়।প্রযুক্তির ব্যবহার করার জন্য উচ্চমূল্য দিতে হয়,বিভিন্ন রকম মানসিক
সমস্যা দেখা দেয়, পরীক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটি দেখা দেয়,মূল্যায়নের অভাব
হয়,নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয়,এমন অনেক অসুবিধার কথা শোনা যায়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের অসুবিধা গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং দক্ষতার অভাব, উচ্চমূল্য, ইন্টারনেট সংযোগের অভাব, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ,নিরাপত্তা ঝুঁকি ইত্যাদি ।
নিচে অসুবিধাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং দক্ষতার অভাবঃশিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান এবং দক্ষতা থাকতে হবে।অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী এ প্রযুক্তির সাথে পরিচিত নয়, যা একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করে।
- উচ্চ মূল্যঃডিজিটাল সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার এর দাম অনেক বেশি,যা সকলের জন্য সহজলভ্য নয়।বিশেষ করে দরিদ্র পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি একটি বড় সমস্যা।
- ইন্টারনেট সংযোগের অভাবঃঅনলাইন শিক্ষার জন্য দ্রুত এবং স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন কিন্তু গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের অভাব দেখা যায়।এটি ডিজিটাল বৈষম্য তৈরি করে,যেখানে কিছু শিক্ষার্থী ইন্টারনেটের অভাবে পিছিয়ে পড়ে।
- স্বাস্থ্য সমস্যাঃঅতিরিক্ত সময় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে যেমনঃ চোখের সমস্যা বা মানসিক চাপ।
- সামাজিক বিচ্ছিন্নতাঃডিজিটাল শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনেক সময় একে অপরের থেকে দূরে থাকে।যা তাদের সামাজিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে একসাথে শেখার ও আলোচনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।
- সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিঃ ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করার সময় শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং ডাটা চুরি হওয়া ঝুঁকি থাকে এছাড়াও অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কন্টেন্ট এবং সাইবার বুলিং এর শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এভাবে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- শিক্ষকের বিকল্প নয়ঃ ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষকদের বিকল্প হতে পারে না।শিক্ষকের ব্যক্তিগত মনোযোগ এবং দিকনির্দেশনা শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।প্রযুক্তি কেবল শিক্ষার একটি সহায়ক হিসেবে কাজ করে,যা শিক্ষকের ভূমিকা আরও কার্যকর করতে পারে।
- মনোযোগের অভাবঃডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই বিভিন্ন ডিস্ট্রাকশন এর শিকার হয় যেমনঃগেম,সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য এপ্লিকেশনের কারণে তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যেতে পারে।
- পরীক্ষার নিরাপত্তাঃঅনলাইন পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বিভিন্ন জালিয়াতির ঝুঁকি থাকে যা পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করে থাকে।এভাবে শিক্ষার্থীদের মেধা ও পরিশ্রমের সঠিক মূল্যায়ন বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। বিশ্বায়নের এই যুগে উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির সমন্বয়ে ঘটিয়েছে। শিক্ষায় প্রচলিত ধরার শিখন-শেখানো পদ্ধতির পরিবর্তে বর্তমানে শিখন-শেখানো পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির সংযোগ করা হয়েছে। শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রমে অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের মতো প্রযুক্তিকেও একটি শিক্ষা উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করা হয়েছে।
যা শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করছে। সনাতন পদ্ধতির শিখন শেখানো এবং মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদানের মাঝে ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বিশ্বব্যাপী শিখন শেখানো এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষা ব্যবস্থায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করা হয়েছে বহুদিন আগেই। আমাদের শিক্ষার্থীদের ২১ শতকের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ে ঘটানোর কোন বিকল্প নেই। এ বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম একটি যুগোপযোগী এবং সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ।
বাংলাদেশের উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা
বাংলাদেশের উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিসীম। প্রযুক্তিগত উন্নয়নই এখন জাতিগত উন্নয়নের মানদন্ড। তথ্যপ্রযুক্তির স্পর্শে ধীরে ধীরে বাংলাদেশও উন্নতি লাভ করছে। ৯০ এর দশক থেকে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। বাংলাদেশের তরুণ সমাজ বা তরুণ প্রজন্ম তথ্যপ্রযুক্তির দিকে অনেক বেশি ঝুঁকে পড়েছে।
ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার , কম্পিউটার , মাইক্রোফোন ইত্যাদি ব্যবহারে এদেশের ছাত্র সমাজ ও যুব সমাজ অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে ১৯৮৪ সালে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগ স্থাপিত হয়।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয়
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয় কিছু কাজ আছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতি বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে অত্যন্ত আবশ্যক তাই প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়মুখী উচ্চ শিক্ষাকে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক করে গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। এজন্য সরকারকে সকল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কে শক্তিশালী ও সক্রিয় করে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতামূলক যুগে টিকে থাকতে হলে আমাদের দেশে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
এই লক্ষ্যে আমাদের দেশে তরুণ সমাজকে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। এজন্য বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করে তাদেরকে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষায় রূপান্তরিত করতে হবে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মাঝে বিদ্যমান বৈষম্য গুলো কমিয়ে আনতে হবে। গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জনের সমান সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদান
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। সামগ্রিক বিচারের প্রযুক্তিহীন মানব জীবন এখন কল্পনা কর দুঃসাধ্য। প্রযুক্তির স্পর্শ ছাড়া আধুনিক জীবন অকল্পনীয় প্রযুক্তির উদ্ভাবক মানুষ প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রকও মানুষ সুতরাং মানুষ যদি মানবিক গুণাবলীতে আস্থা রাখে তাহলে প্রযুক্তির দ্বারা জীবনের বৃহত্তর মঙ্গল সাধন করা সম্ভব একথা নিশ্চিত রূপে বলা যায়।
শিক্ষার্থীদের এখন বিশ্বব্যাপী শিক্ষা গ্রহণের অনেক সুযোগ আছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে যুক্ত হয়ে, আলোচনার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করতে পারে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে তারা জ্ঞান অর্জন করে থাকে। এতে তাদের খরচ ও সময় বাঁচে এবং অল্প সময়ে অনেক বেশি কিছু শিখে নেয়।
লেখকের মন্তব্যঃশিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো আলোচনা
করা হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা যেমন রয়েছে তেমন অসুবিধা
গুলোও রয়েছে।অসুবিধা গুলোর চেয়ে সুবিধাই বরং বেশি রয়েছে।
বর্তমান যুগ হলো ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগ।তাই আমাদের ডিজিটাল প্রযুক্তির
ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের
মাধ্যমে আধুনিক বিশ্বে বৈপ্লবিক উন্নতি সাধন করতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url