ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। ইসলামে বিড়ালকে একটি পবিত্র প্রাণী হিসেবে বলা হয়েছে। ইসলামে ফেরেশতাদের আকর্ষণ করার উপায় হিসেবে বিড়াল পুষতে বলা হয়েছে।অর্থাৎ যে বাড়িতে বিড়াল থাকে সেই বাড়িতে ফেরেশতাদের আনাগোনা বাড়ে।
ঘরে বিড়াল পোষা এবং তাদের যত্ন নেওয়াতে কোনো দোষ নেই।এই আর্টিকেলে বিড়াল পালনের উপকারিতা, সতর্কতা, নিয়ম-কানুন সহ ইসলামী বিধানগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।পেজ সূচিপত্রঃইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা
- মুসলিমরা কেন বিড়াল পালন করে
- ইসলামে বিড়ালের ঝুটা কি নাপাক
- বিড়ালের মলমূত্র কি নাপাক
- ইসলামে বিড়াল পবিত্র কেন
- ইসলামে বিড়াল কেনাবেচা কি জায়েজ
- ইসলামে বিড়ালকে এত সুন্দর কেন বলা হয়
- নামাজের সময় জায়নামাজে বিড়াল বসলে কি কোন ক্ষতি হয়
- বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
- বিড়াল পুষলে কি হয়
- বিড়াল পালনের সতর্কতা গুলো কী কী
- লেখকের মন্তব্যঃইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা
ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতার কথা বলা আছে। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর পোষা বিড়ালের নাম ছিল মুইজ্জা। মুইজ্জা শব্দের অর্থ প্রিয় বা পছন্দনীয়/সম্মানিত। রাসূল সাঃ তার পছন্দের বিড়ালকে ভালোবেসে এই নামটি দিয়েছিলেন । এতে বিড়ালের প্রতি তাঁর স্নেহশীল আচরণ ও ভালোবাসার প্রকাশ পায়। বাড়িতে বিড়াল পুষলে বাড়ির পরিবেশ ভালো থাকে।
ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে নিচে জানানো হলোঃ
- আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বিড়াল পালন করা পছন্দ করতেন। তাই বিড়াল পালন করা সুন্নাত এবং এতে সওয়াব পাওয়া যায়।
- বিড়াল পালন করলে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায় এবং ফেরেশতা থাকে বাড়ীতে।
- বিড়াল পুষলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
- বিড়াল পবিত্র প্রাণী, তার সাথে থাকা ভালো।
- বিড়াল খুব প্রভুভক্ত ও বিশ্বস্ত প্রাণী।
- বিড়ালের লালা ক্ষতিকর নয়, তাই নিরাপদ থাকা যায়।
- বিড়াল খুব ভালো খেলার সাথী হয়।
- বিড়ালের দুয়া আল্লাহ কবুল করেন।
- বিড়াল যে বাড়িতে থাকে সেখানে জীন বা অপশক্তি থাকে না।
- বিড়াল পুষলে মন ভালো থাকে এবং অন্তর নরম হয়।
মুসলিমরা কেন বিড়াল পালন করে
বিড়ালকে প্রিয় নবী সাঃ এর প্রিয় প্রাণী বলা হয়। ইসলামে বিড়াল পালন করা জায়েজ বলা হয়েছে । অর্থাৎ ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিড়াল পালনে কোনো অসুবিধা নেই। মুসলিম দেশ গুলির মানুষেরা বিড়াল পালন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বিড়াল খুব আদর প্রিয় এবং স্নেহশীল প্রাণী। বিড়াল পালন করলে বারাকাহ লাভ করা যায়। তুর্কিরা বিড়াল খুব পছন্দ করে এবং বিড়ালের জন্য খরচ করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে শুধুমাত্র সওয়াবের আশায়।
পবিত্র মক্কা নগরীর আশেপাশে এই প্রাণচঞ্চল প্রাণীটির দেখা মিলে। কখনো পবিত্র কাবা শরীফে আবার কখনো বা মসজিদে। আবার কখনো দেখা মিলে নামাজরত ইমামের কাঁধে। রাসূল সাঃ এঁর রওজা,মদিনা শরীফের মসজিদে নববী এবং এর আশেপাশে অনেক বিড়াল বিচরণ করে থাকে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাঃ এঁর পছন্দের জিনিসকে ভালবাসলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাঃ যে প্রাণী পছন্দ করেছেন সেই প্রাণী বাড়িতে থাকলে তা বাড়িতে ফেরেশতা নিয়ে আসে এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।
আল্লাহ তাআলা বলেন,পৃথিবীতে যা কিছু আছে (সমস্ত সৃষ্টি) সবকিছুই তিনি তোমাদের (আশরাফুল মাখলুকাত বা মানুষের) উপকারের জন্য সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আসমানের প্রতি মনঃসংযোগ করেন। তারপর সাত আসমান সুবিন্যস্ত করেন এবং তিনি সর্বজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়।(সূরা বাকারাঃ২৯)
ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে সমস্ত সৃষ্টির প্রতি সদয় ও সহানুভূতিশীল হতে। বিশেষ করে বিড়ালদের প্রতি এবং অন্যান্য প্রাণীদের প্রতিও। এটা মহান স্রষ্টার মাহাত্ম্য। আল্লাহ তায়ালা সর্বশক্তিমান ও পবিত্র। বিড়াল এবং অন্যান্য সৃষ্টি তার অসীম জ্ঞান, শক্তি ও পরিপূর্ণতার সাক্ষ্য দেয়। বিড়ালের সৌন্দর্য চপলতা ও প্রবৃত্তি আমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টিকৃত গোটা বিশ্বের জটিলতা ও সংগতি মনে করিয়ে দেয়। তাই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এবং আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এঁর সুন্নত আদায়ের নিয়তে মুসলিমরা বিড়াল পালন করে থাকে।
ইসলামে বিড়ালের ঝুটা কি নাপাক
ইসলামে বিড়ালের ঝুটা নাপাক নয়। এ সম্পর্কে একটি হাদিস বর্ণনা করা হলোঃহযরত আবু কাতাদা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃবলেছেন নিশ্চয়ই বিড়াল বা বিড়ালের ঝুটা নাপাক নয়। কারণ এই প্রাণীটি এমন যে,তোমাদের আশেপাশের অধিক বিচরণ করে থাকে। জামে তিরমিজি ৯২
নির্ভরযোগ্য বর্ণনা অনুসারে জানা যায় যে বিড়ালের পান করা পানি দিয়ে নামাজের জন্য ওযু করা জায়েজ। আবার বিড়াল যে পাত্র থেকে খেয়েছে সেই খাবার খাওয়াও জায়েজ আছে।
বিড়ালের মলমূত্র কি নাপাক
বিড়ালের মলমূত্র নাপাক। তাই কোনো কাপড়ে বিড়ালের মলমূত্র লেগে গেলে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় করতে হবে। বিড়াল পালনের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিড়ালকে পটি ট্রেইন করাতে হবে, যাতে তাদের মলমূত্র ত্যাগের নির্দিষ্ট জায়গায় তারা মলমূত্র ত্যাগ করে এবং নাপাকি মুক্ত থাকে।
ইসলামে বিড়াল পবিত্র কেন
ইসলামে বিড়াল পবিত্র কারণ বিড়াল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য বেশি প্রশংসিত হয়ে থাকে। তারা নিজেরাই নিজেদের জিহবা দিয়ে চেটে শরীর পরিস্কার করে থাকে। বর্তমানে দেশি ও বিদেশী বিড়াল পালনের প্রতি মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আবু কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) বলেছেন,বিড়াল অপবিত্র নয় এরা তোমাদের আশেপাশে বিচরণকারী এবং বিচরণকারীনি। (নাসায়ী ৩৪১)
রাসূল (সাঃ) এর একজন প্রিয় সাহাবী ছিলেন,তার নাম ছিল আব্দুর রহমান (রাঃ)। সেই সাহাবী (রাঃ) বিড়াল খুব পছন্দ করতেন এবং আস্তিনের মধ্যে বিড়াল নিয়ে তিনি মসজিদে যেতেন। তাই রাসুল সাঃ তার বিড়াল প্রীতি দেখে তার নাম দিয়েছিলেন আবু হুরায়রা অর্থাৎ বিড়ালের পিতা। এরপর থেকে সবাই থাকে আব্দুর রহমান রাঃ নামের বদলে আবু হুরায়রা রাঃ নামে ডাকতেন। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে বিড়াল পবিত্র প্রাণী তাই সাহাবা রাঃ বিড়াল পালন করতেন।
ইসলামে বিড়াল কেনাবেচা কি জায়েজ
ইসলামে বিড়াল কেনাবেচা জায়েজ নয়। ইসলামে বলা হয়েছে, যে সকল প্রাণীর গোশত খাওয়া হালাল নয় তাদের কেনাবেচা করা জায়েজ নয়। যেহেতু এই প্রাণীর গোশত খাওয়া জায়েজ নয় সুতরাং তাদের কেনাবেচা করা জায়েজ নয়।
ইসলামে বিড়ালকে এত সুন্দর কেন বলা হয়
ইসলামে বিড়ালকে সুন্দর পোষা প্রাণী বলা হয়। বিড়াল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রশংসিত প্রাণী এবং বিড়ালকে আচরণগত ভাবে শুদ্ধ বলে মনে করা হয় এবং বিড়াল পালনে বারাকাহ লাভ করা যায়। বিড়াল বাড়িতে ও মসজিদে রাখা যায়। বিড়াল খুব নম্র ও ভদ্র প্রাণী। এদের মায়াবী চোখের নিষ্পাপ চাহনিতে এবং নরম লোমের দেহের সৌন্দর্যে আর মিউ মিউ ডাকে মানুষের মন নরম হয়ে যায়। তাই তাদের প্রতি মায়া হয়।
নামাজের সময় জায়নামাজে বিড়াল বসলে কি কোন ক্ষতি হয়
নামাজের সময় জায়নামাজে বিড়াল বসলে কোন ক্ষতি হয় না। বিড়াল কোন ক্ষতিকারক প্রাণী নয় এবং এটি অপবিত্র নয়। তাদেরকে ধর্মীয়ভাবে পরিষ্কার বলে মনে করা হয় এ কারণে তাদেরকে মসজিদে অবাধে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,বিড়াল কখনো নামাজ বিনষ্ট করে না কারণ তারা ঘরের জিনিসের অন্তর্ভুক্ত।
এমনকি বিড়ালই একমাত্র মাংসাশী প্রাণী যাকে কাবা শরীফে প্রবেশের অনুমতি দেয়া আছে ইসলামে।মুসলিমরা নামাজরত অবস্থায় যে শান্তির এবং আধ্যাত্মিকতার পরিবেশ তৈরি হয় তাতে বিড়ালরা এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে জায়নামাজে বসে পড়ে। এভাবে তারা তাদের নিরাপদ থাকার এবং ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে থাকে।
বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
বিড়ালকে ইসলামে পবিত্র প্রাণী হিসেবে মনে করা হয়। ইসলামে বিড়ালকে নাজিস নয় বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বিড়াল মানুষের আশেপাশে বিচরণ করা প্রাণী এবং তারা নিজেরা সবসময় পবিত্র থাকা পছন্দ করে। তারা নিজেরাই নিজেদের শরীরের ময়লা জিহবা দিয়ে পরিষ্কার করে থাকে। তাদের শরীরে কোন ময়লা থাকা তারা পছন্দ করে না।
বিড়ালের লালা পাক এবং বিশুদ্ধ হয়ে থাকে। বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা থাকা হলো ইসলামী বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। হাদিসে বর্ণিত আছে,সাহাবীরা বিড়াল সহ অন্যান্য পশুপাখিকে নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন,"হে আল্লাহর রাসূল পশুপাখিদের মধ্যেও কি আমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে? আল্লাহর রাসুল বললেন, প্রতিটি তাজা কলিজায় সওয়াব রয়েছে।"(মুসলিম ঃ২২৪৫)
বিড়াল পুষলে কি হয়
বিড়াল পুষলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যিনি বিড়াল ভালোবাসেন
তাকে ইংরেজিতে আইলুরোফাইল বলা হয়। এর মানে হলো যিনি ভালবেসে বিড়াল পোষেন
এবং এদের প্রিয় ইমোজি হচ্ছে বিড়ালের মুখ।
বিড়াল খুব শান্ত,পরিষ্কার এবং খাটি প্রাণী। বিড়াল পুষলে আল্লাহর রাসূল সাঃ এর সুন্নত পালন করা হয়ে থাকে। বিড়াল বাড়িতে পুষলে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ খেয়ে তারা বাড়িকে নিরাপদে রাখে। বিড়াল কাঁদলে বুঝতে হবে আশেপাশের লোকের জন্য এটি সতর্কতা স্বরূপ। খারাপ কিছুর প্রভাব আছে বাড়িতে। তাই তখন বেশি বেশি দোয়া করতে হবে এবং খারাপ প্রভাব কাটাতে হবে।
বাড়িতে খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশই বিড়ালের খাবার হয় এতে অপচয় দূর হয় এবং সেই সাথে সওয়াব লাভ হয়। বিড়াল পালনে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে একাকীত্ব দূর হয় এবং শিশুদের খেলার সাথী হিসেবে কাজ করে শিশুদের এলার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। যারা বিড়াল পোষে তাদের হার্টের প্রবলেম হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। মন ভালো থাকে তাই ডিপ্রেশনে ভুগে না।
বিড়াল পুষলে অনেক সওয়াব হাসিল হয়। পোষা বিড়াল মনিবের জন্য দোয়া করে। এ সম্পর্কে একটি রেওয়ায়েত এসেছে যে,"প্রত্যেকদিন আসর নামাজের পর ফেরেশতারা প্রত্যেক পশুপাখির কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,বলো তোমার মনিব তোমার সাথে কেমন আচরণ করেছে? তোমাকে আহার করিয়েছে কিনা বলো"? যখন বিড়ালকে এই প্রশ্ন করা হয় তখন বিড়াল তার মালিকের জন্য দোয়া করতে থাকে।
বিড়াল তার মনিবের জন্য দোয়া করে বলে,"হে রাব্বুল আলামিন, এই মানুষ আমাকে আমার পছন্দের খাবার খেতে দিয়েছে।হে আল্লাহ, তুমিও তার পছন্দের জিনিসের ব্যবস্থা করে দাও।"
তাই পোষা বিড়ালের যত্ন নিলে তার এই দোয়া আল্লাহ কবুল করেন এবং বিড়ালের মালিকের রিজিকে বরকত দান করেন। এভাবে বিড়াল পালনে উপকারিতা পাওয়া যায় বলেই মুসলিমরা বিড়াল পুষে থাকে।
বিড়াল পালনের সর্তকতাগুলো কী কী
বিড়াল পালনের ক্ষেত্রে সতর্কতা মেনে চলা উচিত। বিড়াল বাড়িতে রেখে কোন ভাবেই তাকে কষ্ট দেয়া যাবে না। বিড়াল পুষলে তার যথেষ্ট যত্ন নিতে হবে,পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে,চিকিৎসা করাতে হবে। বিড়ালের নখের আঁচড় যেন না লাগে তাই নিয়মিত তাদের নখ কেটে দিয়ে ছোট রাখতে হবে। তাদের বেশি বিরক্ত করা যাবে না। বিড়ালকে ভ্যাকসিন দিয়ে নিতে হবে।
এতে তার শরীর ভালো থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বিড়ালকে পটি ট্রেইন করতে হয়। তাহলে যেখানে সেখানে পি-পটি করে ঘর নোংরা হওয়া থেকে বাঁচা যায়। অনেক সময় বিড়ালের লোম ঝরে,খাবারে যেন লোম না যায় তা খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের সাথে লোম পেটে গেলে ডায়রিয়া হতে পারে।
বিড়ালের উপর কোন ধরনের অবিচার করা যাবে না। হাদিসে আছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত- রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "একজন মহিলা জাহান্নামে প্রবেশ করেছিল একটি বিড়ালের কারণে, যাকে সে বেঁধে রেখেছিল কিন্তু তাকে খেতে দেয়নি আবার তাকে ছেড়েও দেয়নি যাতে সে পৃথিবীর কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারতো।"(মুসলিমঃ৫৭৪৫)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে,বিড়ালের সাথে কোন রকম অবিচার করলে আল্লাহর কাছে
জবাবদিহি করতে হবে।
লেখক এর মন্তব্যঃইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে এখানে লেখা হয়েছে। বিড়াল পালন করা শুধু সৌখিনতা নয়। ইসলামী রীতিতে বিড়াল পালন করা অনেক সওয়াবের কাজ হিসেবে ধরা হয়। বিড়াল পালনকারীরা অহংকারী হয় না বরং তারা দায়িত্বশীল হয়। বিড়াল পালন করা ধৈর্যশীল লোকের দ্বারাই সম্ভব। কারণ বিড়ালকে একটি ছোট শিশুর মতো করে লালন-পালন করতে হয়। তাদের অনেক যত্ন নিতে হয়। আপনি যদি বিড়াল পালন করেন তবে বিড়ালের যত্ন নেয়ার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর কাছে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন।
সুতরাং হাশরের ময়দানে ওই বিড়ালের প্রতি সকল আচরণের হিসাব আপনাকে দিতে হবে। এজন্য বিড়ালের প্রতি আপনার দায়িত্ব গুলো গুরুত্বের সাথে পালন করুন। মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন, কেননা বিড়াল আমাদের জন্য আনন্দ ও সৌভাগ্য নিয়ে আসে।
আর এই অশেষ নেয়ামতের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে হবে বিড়াল সহ সমস্ত জীবন্ত সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণের জন্য আপনি মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে পুরস্কার লাভ করতে পারবেন। আবার খারাপ আচরণের জন্য পাপের ভাগীদার হবেন। আর এই পাপ আপনাকে জাহান্নামেও নিয়ে যেতে পারে যেমনটি ঘটেছিল ওই মহিলার ক্ষেত্রে, যে বিড়ালকে আটকে রেখে মেরে ফেলেছিল বলে জাহান্নামে যেতে হয়েছিল। সবশেষে দোয়া করি,আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে প্রত্যেক প্রাণের প্রতি সদয় হওয়ার তৌফিক দান করুন,আমীন।
বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
বহু আগে থেকেই মানুষ কেন বিড়াল পুষে ?
উত্তরঃবহু আগে থেকেই মানুষের বিড়াল পোষার কারণ হলো, ঘর থেকে ইঁদুর,বিষাক্ত সাপ, টিকটিকি,তেলাপোকা সহ অন্যান্য ক্ষতিকারক পোকামাকড় থেকে ঘরকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সুরক্ষিত রাখা।
বিড়াল পানি পান করা ছাড়া কত দিন বাঁচে?
উত্তরঃবিড়াল দিনে তিন-চার বার পানি পান করে থাকে। পানি পান করা ছাড়া ২-৩ দিনের বেশি বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব। ভেজা খাবার থেকেও বিড়াল পানির চাহিদা পূরণ করে থাকে। যে বিড়াল খাবার খায় না,পানি পান করে না, তার শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয় এবং মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে।
বিড়াল দিনে কত ঘন্টা ঘুমায়?
উত্তরঃ রাত দিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিড়াল প্রায় ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকে। প্রায় ৪০% বিড়াল ১৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয় তাই বেশিরভাগ বিড়াল তাদের ছোটবেলার চেয়ে আরো কয়েক ঘন্টা বেশি ঘুমায়।
বিড়াল পালনে কি বারাকাহ আসে?
উত্তরঃহযরত মুহাম্মদ সাঃ প্রিয় পোষার প্রাণী ছিল বিড়াল। আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর পছন্দের জিনিস আল্লাহ তায়ালাও পছন্দ করেন। তাই বিড়াল পালনে আল্লাহতায়ালা বারাকাহ দান করেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url