গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার

এই আর্টিকেলে গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যাতে তারা উপকৃত হয়। গর্ভাবস্থায় মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। এর ফলে অল্পতেই তারা জ্বর,সর্দি,কাশি,এলার্জি, চুলকানি এবং ইনফেকশনের মত বিভিন্ন অসুখে ভোগেন। 

গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার

সুষম পুষ্টি গ্রহণ করলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং অসুখ-বিসুখ থেকে ভালো থাকবে। তাই আমরা সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে যে সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় এবং  গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মা তার নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টিকর খাবার কিভাবে গ্রহণের অভ্যাস করলে সুষম পুষ্টির ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে তা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছি এই আর্টিকেলে।  

পেজ সূচিপত্রঃগর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে জেনে নিন 

গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার

গর্ভবতী মায়েদের ইমিউনিটি বুষ্টিং করতে এই খাবারগুলো খুব উপকারী ভূমিকা রাখবে। গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি  বাড়ায়  যে সকল খাবার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। 

কিছু ইমিউনিটি বুস্টিং খাবারে কথা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

১।রসুনঃ রসুন কুচি বা রসুনের পেস্ট করলে তাতে এলিসিন নামক অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান পাওয়া যায়। সাধারণত ঠান্ডা লাগা বা কাশি কমাতে এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন ভালো করতে রসুন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

রসুন খাওয়ার নিয়মঃরসুন খাওয়ার সবজি বা তরকারি দেয়ার সময় এবং শাক বা ডালের বাগারে ব্যবহার করা যায়। রসুনের আচার খুব উপকারী। সামান্য পরিমাণ মধুর সাথে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায়। অসুস্থতার সময় দ্রুত ইমিউনিটি বুস্ট করতে এই পদ্ধতিতে খাওয়া যাবে। এছাড়াও রসুন কিছুটা চিবিয়ে তারপর পানি দিয়ে গিলে খেলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।

২। আদাঃআদা খেলে প্রায় অর্ধেক রোগ ব্যাধি দূর হয়ে যায়। কথায় আছে,যদি খাও আদা তবে অসুখ সারবে আধা। আদা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণসম্পন্ন হয়ে থাকে। এতে আরো আছে আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি। এইসব উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণের কারণে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। আদা তে উপস্থিত জিঞ্জারোল নামক উপাদান সাধারণ সর্দি-কাশি উপশম করতে সাহায্য করে। আদা খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়,মর্নিং সিকনেস ভালো হয় এবং বদহজম প্রতিরোধ করে।

আদা খাওয়ার নিয়মঃ গোশতের তরকারি এবং সমস্ত ঝোল তরকারি রান্নাতে আদা পেস্ট করে ব্যবহার করতে হবে।পাস্তা ও নুডুলস রান্নায় শুকনো আদার গুঁড়ো দিয়ে মসলা হিসেবে খেতে হবে। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েরা পানিতে আদা কুচি করে কয়েক মিনিট জ্বাল দিয়ে সেই পানি পান করলে বমি বমি ভাব দূর হয়। আদা কুচি দিয়ে এক কাপ হালকা লিকারের চা খেতে পারেন।

৩। হলুদঃহলুদে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি ইনফ্লেমেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। হলুদে রয়েছে ফাইবার,ভিটামিন ও মিনারেলসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। হলুদ ডাইজেস্ট করতে সাহায্য করে। হলুদ খেলে ডাইজেস্টিভ ট্র্যাকট পেশীর কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় এবং হজম সমস্যা দূরীভূত হয়।
হলুদে উপস্থিত কার কিউমিন উপাদান মানুষের শরীরের ডোপামিন ও সেরোটোনি্ন হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে পারে যা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে।

হলুদ খাওয়ার নিয়মঃবিভিন্ন রান্নায় মসলা হিসেবে হলুদ ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে হলুদ গুঁড়া মেশানো পানীয় খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। রাতে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে খেলে সর্দি জ্বর ভালো হয়।

৪। লেবুঃলেবুতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি,আয়রন,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ফোলেট সহ বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। লেবুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং সাধারণ সর্দি-কাশিতে জীবাণুর বিরুদ্ধে ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে। ফলে অতিরিক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং তাড়াতাড়ি সর্দি কাশি ভালো হয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে ভিটামিন সি যুক্ত লেবু খেলে শরীরের আয়রনের শোষণ বাড়াতে এটি সাহায্য করে যেমনঃকচু শাকে যে আয়রন আছে তার শোষণ বাড়াতে খাওয়ার সময় লেবু নিলে তা সাহায্য করবে।

লেবু খাওয়ার নিয়মঃযে কোন খাবারের সাথেই লেবুর কম্বিনেশন টা খুব ভালো। বাংলাদেশের মানুষ ডাল- ভাতে লেবু খাওয়া খুব পছন্দ করে। গোশত ভাতের সাথে লেবু খেতে খুব ভালো লাগে। ডাল ও গোশতের সাথে লেবু খেলে এতে থাকা আয়রনের শোষণ ক্ষমতা আরো বেড়ে যায়। ঠান্ডা বা গরমে লেবুর শরবত খুব উপকারী। লেবু অন্যান্য ইমিউনিটি বুস্টিং খাবারের সাথে মিশিয়ে পানীয় তৈরি করে পান করলে সর্দি-কাশিতে বা অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।

সহজ রেসিপি হলো,হাফ চামচ আদা গুঁড়া বা আদার পেস্ট,হাফ চামচ হলুদের গুঁড়া,দুইটি লং,দুই ইঞ্চি পরিমাণ দারচিনি,একটি তেজপাতা দিয়ে পানি ফুটিয়ে তাতে এক টুকরো লেবুর রস ও এক চামচ মধু দিয়ে রেমিডি তৈরি করে পান করলে কয়েকটি ইমিউনিটি বুস্টিং খাবারের স্বাদ ও উপকারিতা একসাথে পাওয়া যাবে। আবার,শুধুমাত্র একটি বড় সাইজের লেবুর রস কুসুম গরম পানিতে দিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে ঠাণ্ডা লাগা ভাব দূর হয় এবং সর্দি-কাশিতে উপশম পাওয়া যায়।

৫।কাঠ বাদামঃকাঠ বাদাম বা আমন্ড খুব পুষ্টিকর খাদ্য। কাঠ বাদামে ক্যালসিয়াম,আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম, জিংক,ভিটামিন ই এবং পটাশিয়াম এর মত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট,যা ভিটামিন-ই এর মত একটি শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট কে শরীরে ভালোভাবে শোষণ করতে সহায়তা করে থাকে। ফলে ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকে। কাঠ বাদামের উপরের বাদামি আস্তরণসহ খেলে পুরোপুরি উপকার পাওয়া যায়।

কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়মঃরাতে দুই থেকে তিনটি কাঠবাদাম ভালোভাবে ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এভাবে খেলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। এছাড়াও রোস্টেড আমন্ড স্ন্যাক্স হিসেবে খাওয়া যায়। আবার টক দই এর সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়।

৬।পালং শাকঃপালং শাক হলো শীতকালীন শাক এবং এটি মৌসুমি খাবার। সারা বছর না পেলেও শীতের মৌসুমে পাওয়া যায় এবং এটি খুব উপকারী শাক। উন্নত দেশগুলোতে এই শাক সারা বছর সংরক্ষণ করা হয়। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি খুবই উপকারী। এতে আছে আয়রন,ক্যালসিয়াম,ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান ইমিউন সিস্টেম ভালো রাখতে সাহায্য করে।

এতে আছে ভিটামিন কে যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে যা প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। পালং শাকে বিদ্যমান ফোলেট গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে। পালং শাক ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

পালং শাক খাওয়ার নিয়মঃপালং শাক দেশীয় শাক ভাজি হিসেবে এবং যা রসুন দিয়ে বাগার দিয়ে(রসুন কুচি তেলে দিয়ে)রান্না করা হয়। পালং শাক ও মাসকলায় ডাল দিয়ে রান্না করে অথবা পালং শাক ও ছোট মাছ বা চিংড়ি মাছ দিয়ে ঝোল তরকারি রান্না করে খাওয়া যায়।

৭।টক দইঃটক দই-এ আছে ক্যালসিয়াম,ফসফরাস,রিবোফ্লাভিন,ভিটামিন বি১২ এর মতো বিভিন্ন উপকারি পুষ্টি উপাদান। ফুল ফ্যাট দই এ রয়েছে প্রোটিনসহ প্রয়োজনীয় প্রায় সব রকমের পুষ্টি উপাদান। টক দই তে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এই ব্যাকটেরিয়া গুলো জীবন্ত বন্ধুসুলভ আচরণ করে যা হজমে সাহায্য করে,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়,কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ডায়রিয়া ভালো করে থাকে ল্যাকটোজ ইন টলারেন্স ব্যক্তিদের জন্য টক দই হজম করতে সহজ হয় এবং এটি ল্যাকটোজ হজম করার সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

টক দই খাওয়ার নিয়মঃটক দই,খেজুর এবং শসা একসাথে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এভাবে খেলে শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায় এবং সুস্বাস্থ্য আনয়ন করে। এছাড়াও সালাদ বা রা‍য়তা বানিয়ে খাওয়া যায়। মধু,বাদাম,খেজুর বা অন্যান্য তাজা ফলের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায়। লাচ্ছি,মাঠা,বোরহানি ইত্যাদি তৈরির সময় দই মিশিয়ে তাতে অল্প লবণ মিশ্রিত করে শরবত বানিয়ে পান যায়। বাজারের দই ভেজালযুক্ত হয়। তাই বাড়িতে বানানো ভেজালমুক্ত দই বেশি ভালো ও কার্যকরী হিসেবে কাজ করে থাকে।

যে কোন খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তাই পরিমিত পরিমাণে এসব খাবার গ্রহণ করা উচিত। প্রেগনেন্সিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ইমিউনিটি বুস্টিং খাবারগুলি খেলে উপকৃত হবে আশা করা যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার কি কি

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য।

বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ,ছোট মাছ,মাছের তেল,অলিভ অয়েল,কাঠবাদাম,কাজুবাদাম ইত্যাদিতে এই ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যেকোনো তরল খাবার এবং কুসুম গরম খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও চা, গ্রিন টি,স্যুপ  এ সমস্ত তরল খাবার গ্রহণের ফলে দেহে ফ্লউইডের ঘাটতি পূরণ হয়। 

দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের জন্য কোন সম্পূরক খাবার খাওয়া উচিত

দুর্বল ইউনিয়ন সিস্টেমের জন্য সম্পূরক খাদ্য হিসেবে যে সকল খাবার খাওয়া হয় সেগুলোকে ইমিউনিটি বুস্টার বলে। ইমিউনিটি বুস্টার হল একটি সম্পূরক খাদ্য যা মরিঙ্গা লিফ পাউডার,অর্গানিক টারমারিক এবং ব্ল্যাক পাইপার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি হয়। এই ইমিউনিটি বুস্টারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে,হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে থাকে,এছাড়াও অনেক উপকারিতা রয়েছে। 

এছাড়াও ইমিউনিটি বাড়াতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬,ভিটামিন বি১২,ভিটামিন সি,ভিটামিন কে, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বল ইউনিয়ন সিস্টেম থেকে উত্তরনের জন্য  ফোলেট,আয়োডিন,আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম এবং জিংক গ্রহণ করা উচিত। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেলে এ সমস্ত ভিটামিন এবং মিনারেলএর অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়।

কোন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ভিটামিন এর কার্যকারিতা রয়েছে। ভিটামিন সি হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী সবচেয়ে বড় উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম। গবেষকদের মতে ভিটামিন সি এর অভাব আপনাকে বেশি অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এটি আপনার শরীরকে প্রধান সৃষ্টিকারী বিষাক্ত পদার্থ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আমড়া,আমলকি,মাল্টা,লেবু ইত্যাদি হলো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। 

ভিটামিন ডি এর অভাবে মানুষের শাসনালীর সংক্রমণ যেমন-সাধারণ সর্দি-কাশি,ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় ও দাঁত দুর্বল হয়। ভিটামিন ডি এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।

হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য এবং নির্দিষ্ট কিছু রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহন করা উচিত। ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস রোগ হয়। ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণে ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি সকালের রোদ গায়ে লাগানো উচিত। অর্থাৎ সকালের রোদে বসে থাকলে চামড়ার নিচে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।  

শরীরে ভিটামিন বাড়ানোর উপায় কি

শরীরের ভিটামিন বাড়ানোর উপায় হল বেশি বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া এবং চর্বিযুক্ত গোশত  পরিহার করা, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার খাওয়া এবং হেলদি লাইফ পরিচালনা করা। শাকসবজি ও ফলমূলের মধ্যে লাল শাক,পালং শাক, ব্রোকলি,বিটরুট,শসা,গাজর,বাঁধাকপি,ফুলকপি,শিম,ছোলা, আপেল,খেজুর ইত্যাদি খেলে শরীর সঠিক মাত্রায় ও সঠিক ভারসাম্যে  প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পাবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন কি কি খাবার খাওয়া উচিত

সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মানুষের ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ফল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত। বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিত। যেসব শাকসবজি ও ফলমূলে বেশি ভিটামিন রয়েছে যেমন পালং শাক,সজনে শাক,লাল শাক,বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন-কাজুবাদাম,কাঠবাদাম, শিম জাতীয় খাদ্য,বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল খাওয়া উচিত। 

ইমিউন সিস্টেম কিভাবে কাজ করে

মানুষের শরীরের শ্বেত রক্তকণিকা হল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান চালিকাশক্তি। এগুলি মানুষের অস্থিমজ্জাতে  তৈরি এবং লিম্ফোটিক সিস্টেমের একটি অংশ। শ্বেত রক্তকণিকা মানুষের শরীরের রক্ত ও টিসুর মধ্য দিয়ে চলাচল করে এবং ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস,পরজীবী এবং ছত্রাকের মতো অনু জীবদের প্রতিহত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায়।

ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা কি

মানুষের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানো হলে রোগব্যাধিতে ভুগতে হয় না। ইমিউনিটি বাড়লে শরীর সুস্থ থাকে এবং অসুস্থ হলে বা আহত হলে তাড়াতাড়ি নিরাময় লাভ করা সম্ভবপর হয়। ইমিউনিটি বাড়াতে চাইলে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং ঘুমাতে হবে। তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনি সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন।

ইমিউনিটির জন্য দায়ী কারণ গুলো কী কী

ইমিউনিটির জন্য দায়ী কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে মানুষের বয়স,লিঙ্গ,বংশগত সমস্যা,বিভিন্ন অসুস্থতা এবং প্রসবকালীন ফ্যাক্টর এর মধ্যে রয়েছে গর্ভকালীন বয়স,জন্মের সময় ওজন,খাওয়ানোর পদ্ধতি এবং মাতৃত্বকালীন ফ্যাক্টর ও বাহ্যিক ফ্যাক্টর যেমন-পূর্বে বিদ্যমান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, মাইক্রোবায়োটিক ক্ষমতা,মাইক্রো বায়োডাটা সংক্রমণ এবং অ্যান্টিবায়োটিক। 

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার উপায় কি

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য আপনি পুষ্টিকর খাবার খেয়ে,শারীরিকভাবে সক্রিয় থেকে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রেখে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারেন। কোন অবস্থাতেই ধূমপান করা বা অ্যালকোহল গ্রহণ করার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। জীবন যাপনের পরিবর্তন করে এবং খারাপ অভ্যাস পরিত্যাগ করে নতুনভাবে জীবনকে সাজাতে হবে।

ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে,অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে,নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে,মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে,পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুমের প্রয়োজন। 

লেখকের মন্তব্যঃগর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার  

গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার কোন গুলো তা নিশ্চয় আপনারা জানতে পেরেছেন। দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের জন্য মানুষের বিভিন্ন রকম রোগব্যাধি হয়ে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা এ সময় খুব দুর্বল থাকে। তাই অনাগত সন্তান ও  গর্ভবতী        মায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার গুলো তাদের নিয়মিত খাওয়ানো উচিত। তাহলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে অর্থাৎ ইমিউনিটি বাড়বে এবং সুস্থ বাচ্চার জন্ম নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।  


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url