গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার
এই আর্টিকেলে গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি যাতে তারা উপকৃত হয়। গর্ভাবস্থায় মায়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। এর ফলে অল্পতেই তারা জ্বর,সর্দি,কাশি,এলার্জি, চুলকানি এবং ইনফেকশনের মত বিভিন্ন অসুখে ভোগেন।
সুষম পুষ্টি গ্রহণ করলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং অসুখ-বিসুখ থেকে ভালো থাকবে। তাই আমরা সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে যে সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যায় এবং গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মা তার নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টিকর খাবার কিভাবে গ্রহণের অভ্যাস করলে সুষম পুষ্টির ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে তা খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছি এই আর্টিকেলে।
পেজ সূচিপত্রঃগর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে জেনে নিন
- গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার কি কি
- দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের জন্য কোন সম্পূরক খাবার খাওয়া উচিত
- কোন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- শরীরে ভিটামিন বাড়ানোর উপায় কি
- সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন কি কি খাবার খাওয়া উচিত
- ইমিউন সিস্টেম কিভাবে কাজ করে
- ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা কি
- ইমিউনিটির জন্য দায়ী কারণ গুলো কী কী
- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার উপায় কি
- লেখকের মন্তব্যঃগর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার
গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার
গর্ভবতী মায়েদের ইমিউনিটি বুষ্টিং করতে এই খাবারগুলো খুব উপকারী ভূমিকা রাখবে। গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
কিছু ইমিউনিটি বুস্টিং খাবারে কথা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার কি কি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য।
বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ,ছোট মাছ,মাছের তেল,অলিভ অয়েল,কাঠবাদাম,কাজুবাদাম
ইত্যাদিতে এই ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যেকোনো তরল খাবার এবং কুসুম গরম খাবার রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও চা, গ্রিন টি,স্যুপ এ সমস্ত তরল খাবার
গ্রহণের ফলে দেহে ফ্লউইডের ঘাটতি পূরণ হয়।
দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের জন্য কোন সম্পূরক খাবার খাওয়া উচিত
দুর্বল ইউনিয়ন সিস্টেমের জন্য সম্পূরক খাদ্য হিসেবে যে সকল খাবার খাওয়া হয়
সেগুলোকে ইমিউনিটি বুস্টার বলে। ইমিউনিটি বুস্টার হল একটি সম্পূরক খাদ্য যা
মরিঙ্গা লিফ পাউডার,অর্গানিক টারমারিক এবং ব্ল্যাক পাইপার মিশ্রণ দিয়ে তৈরি
হয়। এই ইমিউনিটি বুস্টারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এটি রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে,হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য
করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে থাকে,এছাড়াও অনেক উপকারিতা
রয়েছে।
এছাড়াও ইমিউনিটি বাড়াতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬,ভিটামিন বি১২,ভিটামিন
সি,ভিটামিন কে, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা বিশেষভাবে
গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বল ইউনিয়ন সিস্টেম থেকে উত্তরনের জন্য
ফোলেট,আয়োডিন,আয়রন,ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম এবং জিংক গ্রহণ করা
উচিত। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেলে এ সমস্ত ভিটামিন এবং মিনারেলএর অভাব পূরণ
করা সম্ভব হয়।
কোন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ভিটামিন এর কার্যকারিতা রয়েছে।
ভিটামিন সি হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী সবচেয়ে বড় উপাদান গুলোর মধ্যে
অন্যতম। গবেষকদের মতে ভিটামিন সি এর অভাব আপনাকে বেশি অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে
ফেলতে পারে। ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ায় এবং এটি আপনার শরীরকে প্রধান সৃষ্টিকারী বিষাক্ত পদার্থ থেকে রক্ষা
করতে সাহায্য করে। আমড়া,আমলকি,মাল্টা,লেবু ইত্যাদি হলো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ
ফল।
ভিটামিন ডি এর অভাবে মানুষের শাসনালীর সংক্রমণ যেমন-সাধারণ সর্দি-কাশি,ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় ও দাঁত দুর্বল হয়। ভিটামিন ডি এর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।
হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য এবং নির্দিষ্ট কিছু রোগের
প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহন করা
উচিত। ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস রোগ হয়। ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণে
ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি সকালের রোদ গায়ে লাগানো উচিত। অর্থাৎ সকালের রোদে বসে
থাকলে চামড়ার নিচে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।
শরীরে ভিটামিন বাড়ানোর উপায় কি
শরীরের ভিটামিন বাড়ানোর উপায় হল বেশি বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া এবং চর্বিযুক্ত গোশত পরিহার করা, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার খাওয়া এবং হেলদি লাইফ পরিচালনা করা। শাকসবজি ও ফলমূলের মধ্যে লাল শাক,পালং শাক, ব্রোকলি,বিটরুট,শসা,গাজর,বাঁধাকপি,ফুলকপি,শিম,ছোলা, আপেল,খেজুর ইত্যাদি খেলে শরীর সঠিক মাত্রায় ও সঠিক ভারসাম্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পাবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।
সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন কি কি খাবার খাওয়া উচিত
সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মানুষের ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ফল ও
শাকসবজি খাওয়া উচিত। বেশি পরিমাণে পানি পান করা উচিত। যেসব শাকসবজি ও ফলমূলে
বেশি ভিটামিন রয়েছে যেমন পালং শাক,সজনে শাক,লাল শাক,বিভিন্ন ধরনের বাদাম
যেমন-কাজুবাদাম,কাঠবাদাম, শিম জাতীয় খাদ্য,বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং ঢেঁকি
ছাঁটা লাল চাল খাওয়া উচিত।
ইমিউন সিস্টেম কিভাবে কাজ করে
মানুষের শরীরের শ্বেত রক্তকণিকা হল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান চালিকাশক্তি। এগুলি মানুষের অস্থিমজ্জাতে তৈরি এবং লিম্ফোটিক সিস্টেমের একটি অংশ। শ্বেত রক্তকণিকা মানুষের শরীরের রক্ত ও টিসুর মধ্য দিয়ে চলাচল করে এবং ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস,পরজীবী এবং ছত্রাকের মতো অনু জীবদের প্রতিহত করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায়।
ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা কি
মানুষের শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানো হলে রোগব্যাধিতে ভুগতে হয় না। ইমিউনিটি বাড়লে শরীর সুস্থ থাকে এবং অসুস্থ হলে বা আহত হলে তাড়াতাড়ি নিরাময় লাভ করা সম্ভবপর হয়। ইমিউনিটি বাড়াতে চাইলে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং ঘুমাতে হবে। তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং আপনি সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে পারবেন।
ইমিউনিটির জন্য দায়ী কারণ গুলো কী কী
ইমিউনিটির জন্য দায়ী কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে মানুষের বয়স,লিঙ্গ,বংশগত
সমস্যা,বিভিন্ন অসুস্থতা এবং প্রসবকালীন ফ্যাক্টর এর মধ্যে রয়েছে গর্ভকালীন
বয়স,জন্মের সময় ওজন,খাওয়ানোর পদ্ধতি এবং মাতৃত্বকালীন ফ্যাক্টর ও বাহ্যিক
ফ্যাক্টর যেমন-পূর্বে বিদ্যমান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, মাইক্রোবায়োটিক
ক্ষমতা,মাইক্রো বায়োডাটা সংক্রমণ এবং অ্যান্টিবায়োটিক।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার উপায় কি
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য আপনি পুষ্টিকর খাবার খেয়ে,শারীরিকভাবে সক্রিয় থেকে এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রেখে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারেন। কোন অবস্থাতেই ধূমপান করা বা অ্যালকোহল গ্রহণ করার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। জীবন যাপনের পরিবর্তন করে এবং খারাপ অভ্যাস পরিত্যাগ করে নতুনভাবে জীবনকে সাজাতে হবে।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে,অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে,নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে,মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে,পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুমের প্রয়োজন।
লেখকের মন্তব্যঃগর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার
গর্ভবতী মায়ের ইমিউনিটি বাড়ায় যে সকল খাবার অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার কোন গুলো তা নিশ্চয় আপনারা জানতে পেরেছেন। দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের জন্য মানুষের বিভিন্ন রকম রোগব্যাধি হয়ে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা এ সময় খুব দুর্বল থাকে। তাই অনাগত সন্তান ও গর্ভবতী মায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার গুলো তাদের নিয়মিত খাওয়ানো উচিত। তাহলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে অর্থাৎ ইমিউনিটি বাড়বে এবং সুস্থ বাচ্চার জন্ম নিশ্চিত হবে বলে আশা করা যায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url